মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত মাতামুহুরী নদীর পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোরার পাড়া পয়েন্ট শক্তিশালী শ্যালো মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট! অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলেনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ ও বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস করা বেশ কিছু জনবসতি। গত ৭/৮ দিন ধরে মাতামুহুরী নদীর পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মোরার পাড়া পয়েন্টে প্রকাশ্যে নদীতে শক্তিশালী শ্যালো মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করলেও এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
৮ আগষ্ট দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত স্রোতম্বনী মাতামুহুরী নদীর পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা মৌজার মোরার পাড়া পয়েন্টে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় নুরুন নবীর পুত্র নাছির উদ্দিন ও তার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান। তারা নদীর জলজ প্রাণী ও জীব-বৈচিত্র ধ্বংস করে এসব বালু উত্তোলন করে বেড়িবাঁধের ভিতরে অন্যের ফসলি জমি জোরর্প্বূক ভরাট করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নদীর এ পয়েন্টে বালু উত্তোলনের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা থেকে কাউকে ইজারা দেয়নি বলে জানা গেছে। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে নাছির উদ্দিন সিন্ডিকেট এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় মোরার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন মামুন অভিযোগ করে বলেন, ‘মোরার পাড়া গ্রামের নাছির উদ্দিন ও তার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান মাতামুহুরী নদীতে একটি শক্তিশালী শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ ও জনবসতি। তিনি আরো জানান, নাছির উদ্দিন সিন্ডিকেটের উত্তোলিত বালু জোরপূর্বকভাবে বেড়িবাঁধের ভিতরে থাকা তার ২২ শতক জমি দখলে নিয়ে অন্যায়ভাবে ভরাট করার চেষ্টা করছে। এ জমি নিয়ে চকরিয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরপরেও তারা আইন আদালতকে কোন ধরনের তোয়াক্কা না করে নদী থেকে অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলন করে তার জমি ভরাট করার চেষ্টা করছে। তিনি এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মোরার পাড়া পয়েন্টে মাতামুহুরী নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করার পয়েন্টের কাছাকাছি সরকারী বেড়িবাঁধ, এলজিইডির সড়ক ও জনবসতি রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পাইপ সড়কের উপর দিয়ে স্থাপন করায় স্থানীয়দের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পেকুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা কাজল কান্তি শীল জানান, মাতামহুরী নদীর পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মোরার পাড়া পয়েন্টে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি তাঁর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: